সরস্বতী (Sarasvatī) হলেন হিন্দুধর্মে জ্ঞান, সংগীত, শিল্পকলা, বাক্য, প্রজ্ঞা ও বিদ্যার্জনের দেবী। সরস্বতী, লক্ষ্মী ও পার্বতী হিন্দুধর্মে ‘ত্রিদেবী’ নামে পরিচিত।
শ্রীপঞ্চমীর ব্রতকথা
লোমেশ মুনির শ্রেষ্ঠ নিজ তপোবনে।
সশিষ্য ছিলেন বসি আনন্দিত মনে ।
মুনিবর পৌলস্ত আসিয়া সেই স্থানে।
সম্ভাষিয়া মুনিবরে কহেন যতনে৷৷
নানা আলোচনা শেষে লোমশ মুনিরে।
পৌলস্ত জিজ্ঞাসা করে অতি ভক্তিভরে ৷৷
কি করিলে নারী, পতি সোহাগিনী হয়।
তাহার বৃত্তান্ত ঋষি কহ সমুদয় ৷৷
লোমশ কহিল তবে শুন মতিমান।
তাহার বৃত্তান্ত কথা করিব বর্ণন ৷৷
পরম পবিত্র কথা অতি গুহ্য হয়।
শ্রবণ করিলে ইহা সর্ব পাপ ক্ষয়৷
একদিন লক্ষ্মী সহ দেব নারায়ণ।
মধুর আলাপে মত্ত ছিল দুইজন ৷৷
মলয় পর্বত মাঝে বৃক্ষ সমাকুলে।
সুশোভিত ছিল সব ফল আর ফুলে ৷
সরোবরে পদ্ম বনে পদ্ম শোভা পায়।
ফুলে ফুলে অলিকুল সদা গুঞ্জরয়৷৷
সহসা নারদ ঋষি আসিয়া সেখানে।
ভক্তিভরে প্রণমিল লক্ষ্মী নারায়ণে৷৷
নারদে দেখিয়া হরি জিজ্ঞাসে তখন।
কিবা হেতু ওহে ঋষি তব আগমন৷৷
নারদ বিনয়ে কহে দেব জনার্দনে।
গিয়াছিনু ওহে প্রভু তীৰ্থ পর্যটনে॥
নানা তীর্থ ভ্রমি শেষে গিয়া মর্তলোকে।
দেখি নর-নারী ভোগে দুঃখ আর শোকে৷৷
মর্তের দুর্দশা হেরি কাঁদে মোর প্রাণ।
উপায় তাহার প্রভু করুন বিধান৷৷
কি কার্য করিলে মর্তবাসী সুখে রবে।
কোন্ ব্রতফলে সব দুঃখ দূরে যাবে।
বিদ্যা বুদ্ধি নাহি কারো নাহি কোন জ্ঞান।
পাপ কর্মে সদা রত সবাই অজ্ঞান ।
লক্ষ্মী সরস্বতী দোঁহে ছেড়েছে সবারে।
অন্নের লাগিয়া সবে হাহাকার করে৷
বিদ্যাহীন সবে তারা পাপ কর্মে রত।
ধর্ম-কর্ম ত্যজি সবে পাপাচারে রত৷
কি কার্য করিলে প্রভু সবে শান্তি পায়।
তাহার উপায় প্রভু বলুন আমায় ৷৷
লক্ষ্মীদেবী বলে শুন ওহে ঋষিবর।
মহাপুণ্য ব্রত আছে সংসার ভিতর ৷৷
পূর্বে ইহা করেছিল দেবকন্যাগণ।
সে ব্রত করিলে শান্তি পাবে নরগণ।
করযোড়ে ঋষিবর জিজ্ঞাসে লক্ষ্মীরে।
সে ব্রতের কিবা বিধি বলুন আমারে ৷৷
লক্ষ্মী বলে মন দিয়া শুন তপোধন।
ব্রতের বিধান আমি করিব বর্ণন৷৷
মাঘ মাসে শুক্লপক্ষে পঞ্চমী তিথিতে।
পালন করিবে ব্রত পরম ভক্তিতে৷
লক্ষ্মী আর সরস্বতী করিবে অর্চন।
লেখনী ও মস্যাধার করিবে স্থাপন ৷৷
ফল-মূল নৈবেদ্যাদি সাধ্য উপচারে।
যতনে করিবে পূজা বাণী কমলারে৷
You May Like Also Also Like This
0 Comments