হনুমান চালিশা হল রামায়ণের অন্যতম মুখ্য ব্যক্তিত্ব হনুমানের প্রতি নিবেদিত অওধী ভাষায় লিখিত একটি জনপ্রিয় ভক্তিমূলক চালিশা অর্থাৎ চল্লিশটি চৌপাই নিয়ে রচিত কবিতা। জনপ্রিয় মত হল এটি রচনা করেন রামচরিতমানস রচয়িতা কবি তুলসীদাস, সাম্ভাব্য রচনাকাল ১৫৭৫ খ্রীষ্টাব্দ।
চল্লিশটির মধ্যে শেষ চৌপাইটিতে তুলসিদাসের উল্লেখ সেই মতকেই সমর্থন করে। তবে ভিন্ন মতে এটি অনেক পরের রচনা। যদিও অবধী হিন্দির একটি উপভাষা মাত্র, কিন্তু শুধুমাত্র হিন্দিভাষীদের মধ্যেই নয় ভারতের অনেক অঞ্চলেরই লোক যারা হিন্দী বোঝেনা তাদের মধ্যেও প্রেরণাত্মক মন্ত্র বা স্তোত্র বা গান হিসাবে এটি লোকপ্রিয়। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অনেক দেশেই রামায়ণের বহু চরিত্র এখোনো জনপ্রিয় এবং তাদের মধ্যেও হনুমান চালিশার ব্যবহারের উদাহরণ আছে। চ্যালিসিসের বিবরণে হনুমান তার জ্ঞানের ভিত্তিতে, রামের প্রতি শ্রদ্ধা এবং শূন্য অর্থে ব্যক্তি। source- https://bn.wikipedia.org/s/2eid
শ্রীহনুমান চল্লিশা
শ্রীগুরু চরণ পদ্ম স্মরি মনে মনে।
কোটি কোটি প্রণমিনু তাঁহার চরণে ॥
শ্রীরামের চরণপদ্ম করিয়া স্মরণ।
চতুবর্গ ফল যাহে লভি অনুক্ষণ ॥
বুদ্ধিহীন জনে ওহে পবন কুমার।
ঘুচাও মনের যত ক্লেশ ও বিকার। ।
পয়ার-জয় হনুমান জ্ঞান গুনের সাগর।
জয় হে কপীশ প্রভু কৃপার সাগর।।
শ্রীরামের দূত অতুলিত বলধাম।
অঞ্জনার পুত্র পবনসুত নাম ৷৷ ১ ৷৷
মহাবীর বজরঙ্গী তুমি হনুমান।
কুমতি নাশিয়া কর সমতি প্রদান ॥ ২৷
কাঞ্চন বরণ তব তুমি হে সুবেশ।
কর্ণেতে কণ্ডল শোভে কুঞ্চিত কেশ॥৩॥
হাতে বজ্র তব আর ধ্বজা বিরাজে।
সুন্দর গদাটি কাঁধে তোমার যে সাজে ॥৪॥
অপরূপ বাহু তব পবন নন্দন।
মহাতেজ ও প্রতাপ জগত বন্দন ॥ ৫ ||
বিদ্যাবান গুণবান তুমি হে চতুর।
শ্রীরামচন্দ্রের কার্যে তুমি হে আতুর ॥৬॥
সর্বদা রামের আজ্ঞা করিতে পালন।
হৃদে রাখ সদা রাম সীতা ও লক্ষণ ॥৭॥
সূক্ষ্মরূপ ধরি তুমি লঙ্কা প্রবেশিলে।
ধরিয়া বিকট রূপ লঙ্কা দগ্ধ করিলে ॥৮॥
ভীম রূপ ধরি তুমি অসুর সংহার।.
শ্রীরামচন্দ্রে তুমি' সর্ব কাজ কর। ৯।
সঞ্জীবন আনি তুমি বাঁচালে লক্ষ্মণ।
রঘুবীর হন তাহে আনন্দিত মন ৷৷ ১০৷৷
রঘুনাথ দিল তোমা আলিঙ্গন দান।
কহিলেন তুমি ভাই ভরত সমান ॥ ১১৷৷
সহস্র বদন তব গাবে যশ খ্যাতি।
এই বলি আলিঙ্গন করেন শ্রীপতি ॥১২৷
সনকাদি ব্রহ্মাদি যতেক দেবগণ।
নারদ সারস আদি দেব ঋষিগণ। ১৩৷৷
যম ও কুবের আদি দিকপালগণে।
কবি ও কোবিদ যত আছে ত্রিভুবনে ॥ ১৪
সুগ্রীবের উপকার তুমি যে করিলে।
রামসহ মিলাইয়া রাজপদ দিলে ৷৷ ১৫৷৷
তোমার মন্ত্রণা সব বিভীষণ মানিল।
লঙ্কেশ্বরের ভয়ে সবে কম্পমান ছিল। ১৬
সহস্র যোজন ঊর্ধ্বে সূর্য্যদেবে দেখে।
সুমধুর ফল বলি ধাইলে গ্রাসিতে৷৷ ১৭৷৷
জয় রাম বলি তুমি অসীম সাগর।
পার হয়ে প্রবেশিলে লঙ্কার ভিতর। ১৮৷
দুর্গম যতেক কাজ আছে ত্রিভুবনে।
সুগম করিলে তুমি সব রাম গানে ॥ ১৯॥
চিরদ্বারী আছ তুমি শ্রীরামের দ্বারে।
তব আজ্ঞা বিনা কেহ প্রবেশিতে নারে। ২০৷৷
শরণ লইনু প্রভু আমি যে তোমারি।
তুমিই রক্ষক মোর আর কারে ডরি। ২১ ৷৷
নিজ তেজ নিজে তুমি কর সম্বরণ।
তোমার হুঙ্কারে দেখ কাঁপে ত্রিভুবন ॥ ২২৷৷
ভূত প্রেত পিশাচ কাছে আসিতে না পারে।
মহাবীর তব নাম যেইজন স্মরে। ২৩॥
রোগ নাশ কর আর সর্ব পীড়া হর।
মহাবীর নাম যেবা স্মরে নিরন্তর। ২৪॥
সঙ্কটেতে হনুমান উদ্ধার করিতে।
তাঁহার চরণে যেবা মন প্রাণ দিবে৷ ২৫৷
সর্বোপরি রামচন্দ্র তপস্বী ও রাজা।
শ্রীরামের অরিগণে তুমি দিলে সাজা ॥ ২৬৷৷
তোমার চরণে যেবা মন প্রাণ দিবে।
এ জীবনে সেইজন সদা সুখ পাবে। ২৭৷৷
প্রবল প্রতাপ তব হে বায়ু নন্দন।
চার যুগ উজ্জ্বল রহিবে ত্রিভুবন ॥ ২৮।
সাধু সন্ন্যাসীরে রক্ষা কর মূর্ত্তিমান।
শ্রীরামের প্রিয় তুমি অতি গুণবান ॥ ২৯৷৷
অষ্টসিদ্ধি নবসিদ্ধি যাহা কিছু রয়।
সকলই সিদ্ধ হয় তোমার কৃপায় । ৩০ ॥
রাম রামায়ণ আছে তব নিকটেই।
শ্রীরামের দাশ হয়ে রয়েছে সদাই। ৩১৷
তোমার ভজন করিলে রামকে পাইবে। \
জনমে জনমে তার দুঃখ ঘুচে যাবে৷৷ ৩২৷৷
অন্তকালে পাবে সেই রামের চরণ।
এই সার কথা সব শুন ভক্তগণ ॥ ৩৩ ৷৷
সব ছাড়ি বল সবে জয় হনুমান।
হনুমন্ত সর্বসুখ করিবে প্রদান । ৩৪ ॥
সর্ব দুঃখ দূরে যাবে সঙ্কট কাটিবে।
যেই হনুমন্তে স্মরণ করিবে । ৩৫৷৷
জয় জয় জয় জয় হনুমান গোঁসাই।
তব কৃপা ভিন্ন আর কোন গতি নাই। ৩৬।
যেই জন শতবার ইহা পাঠ করে।
সকল অশান্তি তার চলে যায় দূরে। ৩৭॥
হনুমান চল্লিশা যে করেন পঠন ও শ্রবণ।
সর্বকার্য্যে সিদ্ধিলাভ করে সেইজন। ৩৮৷৷
তুলসীদাস সর্বদাই শ্রীহরির দাস।
মনের মন্দিরে প্রভু কর সদা বাস॥ ৩৯৷৷
পবন নন্দন, সঙ্কট হরণ, মঙ্গল মূরতি রূপ।
শ্রীরাম লক্ষ্মণ, জানকী রঞ্জন, তুমি হৃদয়ের ভূপ ॥ ৪০৷৷
ত্রিপদী
পবন নন্দন, সঙ্কট হরণ, মঙ্গল মূরতি রূপ।
শ্রীরাম লক্ষ্মণ, জানকী রঞ্জন, তুমি হৃদয়ের ভূপ।।
পবন নন্দন, প্রব বিক্রম, রাম অনুগত অতি।
চালিসা হেথায়, সমাপন হয়, পদে থাকে যেন মতি।
-ইতি শ্রী হনুমান চল্লিশা-
জেনে নিন-
0 Comments