-->

হরির চরণ ব্রতকথা এবং ব্রতের ফললাভ । Hari charan Brata

হরির চরণ ব্রত (Hari charan Brata) : হরির চরণ ব্রত একটি বিশেষ হিন্দু পূজা ও উৎসব, যা শ্রীকৃষ্ণকে ভগবান ভাষে মানানোর জন্য আদর্শ ব্রত হিসেবে প্রস্তুত করা হয়। এই ব্রতটি প্রায়শই মা ভগবতী বা রাধারাণীর উৎসবে অনুষ্ঠিত হয় এবং মুখ্যভাবে বাঙ্গালি হিন্দু মহিলাদের দ্বারকে প্রবেশ করা হয়। 

Hari charan Brata



এই ব্রতের উদ্দেশ্য স্ত্রীরা তাদের স্বামীর দীর্ঘায়ু, সুখ, সান্ত্বনা এবং দান-ধর্মের সম্পর্কে প্রার্থনা করা এবং হরি (ভগবান বিষ্ণুর এক রূপ) কৃপা ও আশীর্বাদ চানোয়া।
হরির চরণ ব্রতের সাধারণ প্রক্রিয়া নিম্নরূপ:

  • ব্রতের শুরু: ব্রতের দিনে সকালে ব্রত শুরু হয়। স্ত্রীটি স্নান করে পরিপর্য়ন্ত উপবাস করে রাখে।
  • পূজা ও ধ্যান: স্ত্রীটি একটি মন্দিরে যায় এবং হরির চরণ (পা) বা মূর্তি দেবীর সামনে প্রদর্শন করে পূজা ও ধ্যান করে। প্রতিটি ব্রতের মন্দিরে একটি চরণ বা মূর্তি থাকে, যেটি স্ত্রীটি পূজা করে।
  • প্রার্থনা ও ভক্তি: স্ত্রীটি হরির চরণে প্রার্থনা করে এবং হরির কৃপা ও আশীর্বাদের জন্য ভক্তি প্রদর্শন করে। সাধারণভাবে, শ্রীমদ্ভাগবদ গীতা এবং ভগবদ পুরাণের উপদেশনা প্রতিপাদন করা হয়।
  • উপবাস ও ব্রতের মাসে ধর্মিক আচরণ: স্ত্রীটি ব্রতের সময়ে উপবাস রক্ষা করে এবং বিশেষ ধার্মিক আচরণ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। 
  • ব্রতের পরণ (পূর্ণ করণ): ব্রতের শেষে, স্ত্রীটি একটি ব্রতের পরণ অনুষ্ঠান করে, যেখানে একজন ব্রাহ্মণ বা পন্ডিত থাকে এবং স্ত্রীটি হর

মন্ত্র কথা


হরি হর বৈশাখ মাস, হরি বলে ওগো মা,

আজ কেন মা শীতল পা, কোন রমনী পূজে পা, 

সে রমনী কি বর চায়? রাজ্যের রাজা বাপ চায়, 

কোঁকধরণী মা চায়, পন্ডিত আলো স্বামী চায়,

 গুণবতী বউ চায়, রূপবতী কি চায়, 

রাজ্য আলো বেটা চায়, সভা আলো জামাই চায়, 

আলনার কাপড় ঝল্‌মল্ করে, তোলা ঘটি-বাটি ঝক্‌ঝক্ করে। 

গোয়ালে গরু, মরায়ে ধান, বছর অন্তর পুত্র চান ; 

সিঁথেয় সিঁদুর মুখে পান, জন্ম-এয়োস্ত্রী থাকতে চান ; 

একগলা গঙ্গাজলে, মৃত্যু হবে সোয়ামী পুত্রের কোলে। রেখো হরি পদতলে।।

নিয়ম : প্রত্যেকদিন সকালে শুদ্ধবস্ত্র পরে হাতমুখ ধুয়ে একটি পিতলের রেকাবে সাদা চন্দন দিয়ে দুটি হরির পাদপদ্ম এঁকে ডানহাতের দুটি আঙুল ঐ পা দুটির উপর রেখে উপরের মন্ত্রটি তিনবার পাঠ করতে হয়। মহাবিষুব সংক্রান্তিতে শুরু করে সমস্ত বৈশাখ মাস ধরে এই ব্রত পালন করতে হয়। চার বছর এই ব্রত পালন করতে হয়। এই ব্রত কুমারী অবিবাহিতারাই পালন করে থাকেন।

ব্রতফল : চার বছর এই ব্রত পালন করা হয়। এই ব্রত পালন করলে শ্রী হরি সন্তুষ্ট হন। এছাড়াও এই ব্রত পালন করলে কুমারী অবিবাহিতারা নিজেদের মনোমত স্বামী লাভ করে সুখে শান্তিতে বাস করতে পারে। 


হরির চরণ ব্রতের মুখ্য নিয়ম ও উপায়ের মধ্যে নিম্নলিখিত কিছু সাধারণ ধারণা রয়েছে:


উপবাস: হরির চরণ ব্রতের দিনে স্ত্রীরা উপবাস করে থাকেন, যা নির্ধারিত খাবার এবং পানি নিয়ে করা হয়। উপবাসের দিনে কোনও অমিত্র স্ত্রী বা অবর্ণনীয় পুরুষ কাছে আসতে পারে না।

পূজা: উপবাসের পরে, স্ত্রীদের হরির চরণ ব্রত পূজা অনুষ্ঠানের অংশ হয়। তিথির প্রস্থেয়ে দেবী কদম্বিনীর প্রতি ভক্তি এবং আরাধনা করা হয়।

দান: এই দিনে স্ত্রীরা সাধারণভাবে ব্রতের সুযোগে দান দেয়, যেটি সাধারণভাবে ফল, স্বাদিষ্ট আহার, কাপড়, ধান, বা অন্যান্য প্রকারের সামগ্রী হতে পারে।

মন্ত্র জাপ: হরির চরণ ব্রতের সময়ে নির্ধারিত মন্ত্র পঠন ও পূজা সময়ে মন্ত্র জাপ করা হয়, যা দেবীর আশীর্বাদের জন্য মানা হয়।

হরির চরণ ব্রত একটি বিশেষ ধার্মিক অধিকার, এবং স্ত্রীরা এই ব্রত পালন করে নানা আপেক্ষিক সুখ এবং পরিবারের সুখ চান। এই অনুষ্ঠানের সময়ে নিয়মের অমল মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ।

You May Like Also Also Like This

Post a Comment

0 Comments


Advertisement