বিপদ থেকে উদ্ধার এবং সুরক্ষার জন্য ভগবান নারায়ণ বা বিষ্ণুর শরণাপন্ন হওয়া সবচেয়ে শক্তিশালী উপায় বলে মনে করা হয়। শাস্ত্রে একে 'আপদুদ্ধার' মন্ত্র বলা হয়।
নিচে বিপদ নাশের জন্য বিশেষ কিছু মন্ত্র দেওয়া হলো:
১. নারায়ণ আপদুদ্ধার মন্ত্র (সবচেয়ে শক্তিশালী)
যেকোনো বড় বিপদ বা দুশ্চিন্তার সময় এই মন্ত্রটি স্মরণ করলে মনের ভয় দূর হয় এবং রক্ষার পথ প্রশস্ত হয়।
মন্ত্র:
“ওঁ নমো নারায়ণায় নমঃ।।”
অথবা
“কৃষ্ণায় বাসুদেবায় হরয়ে পরমাত্মনে।
প্রণত-ক্লেশ-নাশায় গোবিন্দায় নমো নমঃ।।”
সরল অর্থ: যিনি ভক্তের সমস্ত ক্লেশ (কষ্ট বা বিপদ) নাশ করেন, সেই গোবিন্দকে আমি প্রণাম জানাই।
উপকারিতা: এটি মানসিক শান্তি দেয় এবং যেকোনো কঠিন পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের শক্তি জোগায়।
২. শ্রী লক্ষ্মী-নৃসিংহ মন্ত্র (শত্রু ও ভয় বিনাশের জন্য)
যখন আপনি কোনো দৃশ্যমান বা অদৃশ্য বিপদে (যেমন রোগ, শত্রু বা আইনি ঝামেলা) পড়েন, তখন ভগবান নৃসিংহদেবের (নারায়ণের উগ্র রূপ) এই মন্ত্রটি পাঠ করা হয়। মা লক্ষ্মী তাঁর পাশে থেকে তাঁর ক্রোধ শান্ত করেন এবং ভক্তকে অভয় দেন।
মন্ত্র:
“উগ্রং বীরং মহা-বিষ্ণুং জ্বলন্তং বিশ্বতোমুখম্।
নৃসিংহং ভীষণং ভদ্রং মৃত্যু-মৃত্যুং নমাম্যহম্।।”
উপকারিতা: আকস্মিক বিপদ এবং ভয়ের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এটি অদ্বিতীয়।
৩. গজেন্দ্ৰ মোক্ষণ মন্ত্র (সংক্ষিপ্ত রূপ)
শাস্ত্র মতে, হাতি যখন কুমিরের মুখে পড়ে চরম বিপদে পড়েছিল, তখন সে ভগবানকে যে মন্ত্রে ডেকেছিল, তাকে গজেন্দ্ৰ মোক্ষণ বলে। এর একটি সংক্ষিপ্ত লাইন আপনি জপ করতে পারেন:
মন্ত্র:
“ওঁ শ্রী বিষ্ণবে নমঃ।।” অথবা “ওঁ নমো ভগবতে বাসুদেবায়।।”
৪. বিপদে মা লক্ষ্মীর স্মরণ
যদি আর্থিক বিপদ বা সংসারের কোনো অশান্তির কারণে বিপদে পড়েন, তবে মা লক্ষ্মীর এই চরণে আশ্রয় নিন:
মন্ত্র:
“শরণাগত দীনাত পরিত্রাণ পরায়ণে।
সর্বস্যার্তিহরে দেবি নারায়ণি নমোহস্তু তে।।”
সরল অর্থ: হে দেবী নারায়ণি (লক্ষ্মী), তুমি শরণাগত ও আর্তদের রক্ষা করো এবং সকলের দুঃখ হরণ করো, তোমাকে প্রণাম।
বিপদ মুক্তির জন্য কিছু ছোট পরামর্শ:
বিপদের সময় অস্থির না হয়ে মনে মনে "নারায়ণ, নারায়ণ" বা "গোবিন্দ" নাম জপ করুন।
প্রতিদিন সম্ভব হলে বিষ্ণু সহস্রনাম পাঠ বা শ্রবণ করুন, এটি সব ধরনের গ্রহদোষ ও আপদ থেকে রক্ষা করে।
ঘরে একটি ঘিয়ে ডুবানো তুলসী পাতা নারায়ণের চরণে অর্পণ করে প্রার্থনা করুন।
You May Like Also Also Like This
0 Comments