-->

শ্রীশ্রী সন্তোষী মাতার ব্রতকথা - Santoshi Maa Brota katha

সন্তোষী মা (Santoshi Mataহিন্দুধর্ম-এর একজন অশাস্ত্রীয়লৌকিক নবীন দেবী। সন্তোষী মাকে সন্তোষের অধিষ্ঠাত্রী দেবী বলে অভিহিত করা হয়। বিশেষত উত্তর ভারত ও নেপাল-এর মহিলারা সন্তোষী মায়ের পূজা করে। বার্ষিক ১৬টা শুক্রবার সন্তোষী মা ব্রত নামক এক ব্রত পালন করলে দেবী সন্তুষ্ট হন বলে তাঁরা বিশ্বাস করেন।

মা সন্তোষী প্রণাম মন্ত্র
সর্বমঙ্গলা মঙ্গল্যে শিবে সর্বার্থ সাধিকে
শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরী নারায়ণী নমোহ'স্তুতে।
সরলার্থঃ-হে দেবী,তুমি মঙ্গলের মঙ্গল রূপিণী,কল্যাণময়ী সর্বাভীষ্টপূরিকী, সকলের আশ্রয় সরূপিণী ও ত্রিনয়না।
হে গৌরী,হে মাতা তোমাকে প্রণাম।
শ্রীশ্রী সন্তোষী মাতার


 শ্রীশ্রীসন্তোষী মাতার ব্রতকথা


বতের নিয়ম:-প্রতি শুক্রবার উপবাসে থেকে স্নান করে শুদ্ধবস্ত্রে সন্তোষী মাতার পূজা করতে হয়। পূজার সময় ধূপ-দীপ জ্বালাতে হয়। এই ব্রতে কোনও তিথি নক্ষত্রের নিষেধ নাই। 

ব্রতের উপকরণ— ধান, দূর্বা, ফুল, বেলপাতা, ছােলা, গুড় বা বাতাসা। এইদিন টক দ্রব্য খাওয়া নিষিদ্ধ। ব্রতের ফল-যে সব নারী ভক্তিভরে এই ব্রত উদযাপন করে সেইসব নারী বৈধব্য যন্ত্রণা পায় না ও তাদের সকল মনােবাসনা পূর্ণ হয়। তারা সারাজীবন স্বামী-পুত্র ও পরিজনবর্গসহ সুখে-স্বাচ্ছন্দে কাল কাটায়। তাদের গৃহে অর্থাভাব হয় না। যে কোনও বয়সের পুরুষ ও নারী এই ব্রত করতে পারে।

ব্রতকথা—এক বণিক করিত বাস কোন এক গ্রামে। সাতপুত্র ও পত্নী রাখি গেল স্বর্গধামে।। ছয় ভাই কর্ম করে আনন্দিত হয়ে। অর্থ যাহা পায় তাহা আনি দেয় মায়ে।। ছােটছেলে রামুর ছিল বেকার জীবন।করিতে না পারে কিছু অর্থ উপার্জন।। সাবিত্রী নামেতে ছিল রামুর রমণী। সতী সাধ্বী পতিব্রতা স্বামী সােহাগিনী।। বিবিধ সুখাদ্য মাতা করিয়া রন্ধন। আগে দিত ছয় পুত্রে করিতে ভােজন।। ভাইদের উচ্ছিষ্ট রামুকে খেতে দেয়। বধুদের উচ্ছিষ্ট লয়ে সাবিত্রীকে দেয়। একদা সাবিত্রী তার স্বামীর গােচরে। সব কথা জানাইল ব্যথিত অন্তরে।। পরীক্ষা করিয়া রামু জানিতে পারিল। সব সত্য কথা যাহা সাবিত্রী বলিল।। বুঝিতে পারিল রামু অর্থ নাহি যার। এ সংসারে জন্ম বিফল হয় তার। বিদেশে যাইব রামু সাবিত্রীরে বলে। শুনিয়া সাবিত্রী তাহা ভাসে আঁখিজলে।। দেশে দেশে ঘুরি রামু এক দেশে এল। ধনী সদাগর সঙ্গে তার দেখা হল।। রামুকে সে সদাগর চাকুরী যে দিল। রামুর বুদ্ধিতে ব্যবসা প্রচুর বাড়িল।। ব্যবসায় অংশীদার রামুকে করিল। ক্রমশঃ উন্নতি তার হইতে লাগিল। প্রত্যেক মাসেই রামু সাবিত্রীর নামেতে। পাঠাতে লাগিল টাকা আপনবাড়ীতে৷৷ 

সেই টাকা সাবিত্রী কখনাে নাহি পেত। ছয় ভাই সে টাকা গােপনে লইত।। ছ' জায়ের কথামত সাবিত্রী খাটিত। তবুও সে পেট ভরে খেতে নাহি পেত। শাশুড়ীর অত্যাচার নাহি আর সয়। কাষ্ঠলাগি রােজ তারে বনে যেতে হয়। একদিন নিদ্রা তার আসে আচম্বিতে। জ্যোতির্ময়ী দেবী এক দেখিল স্বপ্নেতে।। বলে আমি মা সন্তোষী পূজা কর মােরে। তার ফলে দুঃখ কষ্ট সব যাবে দূরে। পতি ফিরে পাবে বলি অন্তর্ধান কৈল। স্বপ্নভঙ্গে সাবিত্রী যে উঠিয়া বসিল।। মন্দির দেখি সাবিত্রী সেই স্থানে যায়। দেখে স্বপ্নে দেখা দেবী বিরাজে তথায়। ব্রতবিধি জানিয়া সাবিত্রী ব্রত করে। সন্তোষী মা প্রসন্না হলেন তার পরে৷ হেথা স্বপ্নাদেশ দেবী করেন রামুরে। শীঘ্র করি ওরে রামু ফিরে যাও ঘরে।। দেবীর আদেশে রামু দোকানেতে গেল। সেই দিন লাভ তার দশগুণ হল।। বহু অর্থ লয়ে রামু ফিরে আসে ঘরে। ভক্তিভরে প্রণাম সে করিল মাতারে। পত্নীরে দেখিয়া রামু হইল বিস্মিত। পত্নীমুখে সব শুনি হইল দুঃখিত।। রামু ও সাবিত্রী পূজে সন্তোষী মাতারে। ধনৈশ্বর্য তাহাদের দিনে দিনে বাড়ে। ব্যবসা করিয়া রামু উন্নতি করিল। যথাকালে তাহাদের এক পুত্র সন্তান হল।। ছয় ভাই ছয় জায় মন্ত্রণা করিল। রামুকে বিপদে ফেলিবার চেষ্টা কৈলসত্তোষী মাতার কৃপা ছিল তার পরে। সে কারণে ক্ষতি কেহ করিতে না পারে। সন্তোষী মাতার ব্রত করে যেই জন। ধনে পুত্রে লক্ষ্মীলাভ করে সেই জন।। টক দ্রব্য শুক্রবারে কভু না খাইবে। সন্তোষী মাতার কৃপা অবশ্য পাইবে। সন্তোষীর ব্রতকথা হৈল সমাপন। উলুধ্বনি দাও সবে যত বামাগণ।। জয় জয় সন্তোষী মাতা তুমি গাে কল্যাণী। তােমার কৃপায় সব সুখী হয় জানি।।

-অথ শ্রীশ্রীসন্তোষী মাতার ব্রতকথা সমাপ্ত -

Tag: শ্রীশ্রী সন্তোষী মাতার ব্রতকথা - Santoshi Maa Brota katha, free শ্রীশ্রী সন্তোষী মাতার ব্রতকথা - Download Santoshi Maa Brota katha Bengali 

source: Internet

You May Like Also Also Like This

Post a Comment

0 Comments


Advertisement